আশরাফ আলী সোহান: দেশকে গজবের হাত থেকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে মূর্তি অপসারণ করতে হবে: পীর সাহেব চরমোনাই

মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

দেশকে গজবের হাত থেকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে মূর্তি অপসারণ করতে হবে: পীর সাহেব চরমোনাই

আইবি নিউজ: ১৪ ফেব্রুয়ারি'১৭ মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের হাসান আলী হাইস্কুল মাঠে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ হযরত মাওলানা নুরুল আমিন এর সভাপতিত্বে ও জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াসিন রাশেদসানী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বেলাল হোসাইন এর যৌথ পরিচালনায় প্রধান অতিথির ভাষণ প্রদান করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সংগ্রামী আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই দাঃবাঃ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মকবুল হোসাইন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রীক দেবির মূর্তি স্থাপন ইসলামী সংস্কৃতির উপর চরম আঘাত। সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিষ্টান অধ্যুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের সামনে সর্বোচ্চ আইনপ্রণেতা হিসেবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর নাম লিপিবদ্ধ আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সামনেও কোন মূর্তি নেই। তাহলে বিশ্বের বিপুল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রীক দেবী লেডি জাস্টিস-এর মুর্তি কী উদ্দেশ্যে? তিনি বলেন, ইসলাম ও মুসলিম সাংস্কৃতিক চেতনা ধ্বংসের জন্যই মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে দেবীমূর্তি স্থাপন ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ও মুসলমানদের ঈমান আকিদা পরিপন্থী। মূর্তি হলো গজব ও ধ্বংসের প্রতীক। ইতিহাস প্রমাণ করে ইতিপূর্বে যারা মূর্তির পেছনে পড়েছে এবং মূর্তির ভালবাসায় লিপ্ত হয়েছে তারা সকলেই নির্মমভাবে ধ্বংস হয়েছে। এদেশকে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করার জন্যে একটি মহল ভাস্কর্যের নামে ঢাকাসহ সারাদেশে মূর্তি স্থাপন করছে। তিনি বলেন, ইসলাম এসেছে মূর্তি ধ্বংসের জন্য। পীর সাহেব চরমোনাই সিলেবাস সংশোধন করায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সিলেবাস পরিপূর্ণ সংশোধন এবং শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের চিন্তাচেতনা অনুযায়ী প্রণয়ন করতে হবে।তিনি বলেন, ভারতীয় টিভি চ্যানেল জিটিভি ও স্টার জলসার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে হাজার বছরের মুসলিম বাঙ্গালিত্বকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় ধর্মপ্রাণ জনতাকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সরকারকে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষাআইন ২০১৬ বাতিল ঘোষণা করতে হবে।



বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোণনের যুগ্ম মহসচিব এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, সংশোধিত সিলেবাস ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী নতুনভাবে চক্রান্ত শুরু করেছে। নাস্তিক্যবাদীদের যে কোন চক্রান্ত কঠোরহস্তে প্রতিহত করতে হবে। ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তা চেতনা ভুলুন্ঠিত করে গুটিকয়েক বাম নাস্তিক-মুরতাদের মনোবাসনা অনুযায়ী শিক্ষানীতি ও পাঠ্যসুচি একটি মহল তৈরির ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের ছেলে মেয়েরা তাদের স্ব স্ব ধর্মীয় বিষয়াদী পড়বে, এতে কারো আপত্তি নেই। কিন্তু মুসলমান ছেলে মেয়েদের জন্য হিন্দু ধর্মীয় বিষয়াদী যেভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তা কোন মুসলমান মেনে নিতে পারে না। বিষয়টি অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উস্কানিমূলক। এই উস্কানিমূলক জঘন্য কাজ যারা করেছে ক্ষমতাসীনরা তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে শুধু সরকারকেই নয়, গোটা জাতিকে এর মাশুল দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাও. গাজী আতাউর রহমান বলেন, অপশক্তি ও অপসংস্কৃতির ধারকবাহকদের চিরদিনের জন্য বয়কট করতে হবে। ইসলামবিরোধী শক্তিগুলো মুসলিম যুব সমাজকে নৈতিকতাহীন করতেই বিভিন্ন দিবসের জন্ম দেয়া হয়েছে, ভ্যালেন্টাইন তেমনই একটি দিবস। এ দিবসের অন্তরালে মুসলিম তরুণ তরুণীদের ঘর থেকে বের করে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তাচেতনা বিরোধী বেহায়া দিবসকে কঠোর হস্তে দমন করতে না পারলে, নৈতিকতা সম্পন্ন ও আদর্শিক যুব সমাজ তৈরি না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব হবে নৈতিকতা বিবর্জিত। আর এধরণের নেতৃত্ব দিয়ে দেশ কখনো অগ্রসর হবে না। কাজেই বিভিন্ন বেহায়া দিবস ও অপসংস্কৃতির ধারক-বাহকদেরকে বয়কট করতে হবে এবং যে সকল মিডিয়া অপসংস্কৃতির জন্ম দেয় তা বন্ধ করতে হবে। বর্তসমান  সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মত একটি মুসলিম প্রধান দেশ হতে মূর্তি দ্রুত অপাসারণ করুন, পুরোপুরিভাবে বির্তকিত শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাতিল করুন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাশে দাঁড়ান এটাই আপনার দ্বায়িত্ব। আর না হয় আবার আন্দোলন শুরু হতে পারে।

সমাবেশে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি জননেতা শেখ মুহাঃ জয়নাল আবদীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওঃ গাজী নাসির উদ্দিন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক শাহ্ জামাল গাজী সোহাগ, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম চাঁদপুর জেলা শাখার আহবায়ক অধ্যক্ষ গাজী মুহাম্মদ হানীফ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আফসার উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল বাসার, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ রিয়াজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শেখ রায়হান মুহাম্মাদ আকতার, চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সাংবাদিক মুহাম্মাদ মহসিন হোসেনসহ জেলা ও থানা শাখার নেতৃবৃন্দ। দেশকে গজবের হাত থেকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে মূর্তি অপসারণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি: সাংবাদিক মোহসিন হোসাইন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন