আশরাফ আলী সোহান: যুব সমাজ ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হলে জঙ্গিবাদের উত্থান হতো না: পীর সাহেব চরমোনাই

শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭

যুব সমাজ ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হলে জঙ্গিবাদের উত্থান হতো না: পীর সাহেব চরমোনাই

আইএবি নিউজ ঃ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সমাজ আজকে নীতি-নৈতিকতাহীন, বস্তুতান্ত্রিক সফলতার চিন্তায় বিভোর। মানুষ বল্গাহীন দুর্নীতি, হত্যা, পাপাচার এবং দুুরাচারে লিপ্ত হচ্ছে। শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতাকে লুণ্ঠনের অধিকার মনে করছে। রাজনীতিকে সেবা নয়; বরং শোষনের হাতিয়ার বানিয়েছে। জাতি ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ছুটে চলছে। এই ধরণের সংকট মোকাবেলার জন্য বাংলার যুব সমাজকে জেগে উঠতে হবে। জাতির হাজার বছরের মুক্তির স্বপ্ন যুবকদের কাঁধে অর্পিত হয়। যুবসমাজকে সুষ্ঠু পথে পরিচালিত করা গেলেই দেশ সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে। তাই তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষাসহ ইসলামী শিক্ষার জ্ঞানে শিক্ষিত এবং তাদের সুষ্ঠ পথে পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার রোধে অবিলম্বে ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন ২০১৬ অবিলম্বে বাতিল করে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামিক স্কলারদের সাথে নিয়ে এগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে। জঙ্গিবাদ বন্ধে, জঙ্গি কার্যক্রমের উস্কানিদাতা এবং অর্থদাতাদের চিহ্নিত করে ওদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী কওমি শিক্ষার স্বকীয়তা রক্ষা করতে হবে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, এদেশের মুসলিম যুবকেরা জ্ঞানের অভাবে এবং পশ্চিমা অপপ্রচারের কারণে ইসলামকে বাদ দিয়ে একদিকে কুফরী গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। অপরদিকে ভ্রান্তমতবাদে আকৃষ্ট হয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হচ্ছে জান্নাত পাওয়ার মিথ্যা আশায়। এ পথ থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

শুক্রবার (৩১মার্চ'১৭) রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে আয়োজিত ইসলামী যুব আন্দোলনের ১ম যুব কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কে এম আতিকুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন-এর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরিদি, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, বিকল্প যুব ধারার সাধারণ সম্পাদক মির্জা আসাদুজ্জামান বাচ্চু, জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জি. আশরাফুল আলম ও মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আজো পায়নি। অথচ ইসলামকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার পূর্ণ সুযোগ রয়েছে। আর এজন্য সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি পরিহার করে যুবকদেরকে আদর্শিক রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সাথে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠারজন্য কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করতে হবে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামের নামে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী কর্মকা- দ্বারা মানুষ হত্যা করে ইসলামকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। এসব অপকর্মের স্থান ইসলামে নেই। এগুলো প্রতিহত করে ইসলামের সঠিকরূপ তুলে ধরার জিম্মাদারি গ্রহণ করতে হবে দায়িত্বশীলদের। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রীম কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন করার মত দুঃসাহস সরকার দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অন্যতম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ। এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে ইসলাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইসলামে মূর্তি কিংবা যেকোন প্রাণির ভাস্কর্য নিষিদ্ধ। কিন্তু এদেশের হাতে গোনা কয়েকটি নাস্তিকের চক্রান্তে ইসলাম ও দেশ বিরোধী এই চক্রান্ত কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এখনো সময় আছে সরকারকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ করতেই হবে। যদি মূর্তি অপসারণ না করা হয় তবে সারাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। আর উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।

সম্মেলন শেষে তিনি ইসলামী যুব আন্দোলনের এর চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে চলমান সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নবগঠিত কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা নেছার উদ্দিন এর নাম ঘোষণা করে শপথ বাক্য পাঠ করান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন