আশরাফ আলী সোহান: আবারো পুলিশি বাধায় পণ্ড কর্মসূচি; প্রয়োজনে ঢাকা অবরোধ করে মূর্তি অপসারণে বাধ্য করা হবে: মুফতী ফয়জুল করীম

শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৭

আবারো পুলিশি বাধায় পণ্ড কর্মসূচি; প্রয়োজনে ঢাকা অবরোধ করে মূর্তি অপসারণে বাধ্য করা হবে: মুফতী ফয়জুল করীম

আইএবি নিউজ: সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ব ঘোষিত গণসমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। এমনকি দলীয় অফিস চত্ত্বরেও সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে ডিএমপি বরাবর লিখিত অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন, নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়ে সরকার দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

পূর্ব ঘোষিত গণসমাবেশ করতে না দেয়ায় দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে সর্বোচ্চ বিচারালয় প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে চরম আঘাত করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ঘেঁষে লেডি মূর্তি স্থাপন মুসল্লিদের নামায বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে মূর্তি স্থাপন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। মূর্তি হিন্দুদের প্রতীক, মুসলমানের নয়। তিনি মূর্তি স্থাপন করে প্রধান বিচারপতির পদকে কলঙ্কিত করেছেন তাই তার এ পদে থাকার অধিকার নেই। তাকে অপসারণ করতে হবে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে মূর্তির বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাশ করে হলেও মূর্তি অপসারণ করতে হবে। জাতীয় ঈদগাহ’র সম্মান রক্ষার্থে অবিলম্বে লেডি মূর্তি অপসারণ করুন অন্যথায় সর্বত্র কঠোর আন্দোলন গড়ে উঠলে সরকারের আখের রক্ষা হবে না। তিনি ২১ এপ্রিল জাতীয় মহাসমাবেশ সফলের আহ্বান জানিয়ে বলেন প্রয়োজনে ঢাকা অবরোধ করে মূর্তি অপসারণে বাধ্য করা হবে।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমান, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, শ্রমিকনেতা খলিলুর রহমান, ডা. শহিদুল ইসলাম, মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ছাত্রনেতা সাইফ মুহা. সালমান।



মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, মূর্তির জায়গা উপাসনালয়। এতে মুসলমানদের কোন আপত্তি নেই। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মূর্তি সরাতে হবে। প্রকাশ্যে মূর্তি স্থাপন ইসলাম বিরোধী। রাসূল সা. প্রেরিত হয়ে সর্বপ্রথম কাবা ঘরের মূর্তি ভাঙ্গার নিদের্শ দিয়েছিলেন। তাই ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে মূর্তি সংস্কৃতি রুখে দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার ভারতকে খুশি করতে মূর্তি রক্ষায় ব্যস্ত। মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে ভারতকে খুশি করে মুসলমান দেশের ক্ষমতায় থাকা যায় না। ঈমানী আন্দোলনকে সাময়িকভাবে দমিয়ে রাখা গেলেও আখের ভাল হয় না। জনবিস্ফোরণ ঘটলে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। মূর্তি বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে, মূর্তি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত মুসলমানরা ঘরে ফিরবে না। প্রয়োজনে জীবন ও রক্ত দিয়ে হলেও মূর্তি অপসারণ করা হবে।

অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তাচেতনা বিরোধী গ্রিক মূর্তি স্থাপন করে মুসলমানের ঈমানে চরম আঘাত করেছে। জাতীয় ঈদগাহ’র পাশে এভাবে মূর্তি স্থাপন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। মূর্তির সংস্কৃতি ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র। এ থেকে সরকারকে বের হয়ে আসতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, এ্যার্টনী জেনারেলসহ অনেকে মূর্তির পক্ষে অবস্থান নেয়ায় তাদের জানাজা কোন মুসলমান পড়তে পারে না। ভবিষ্যতে কেউ মূর্তির পক্ষে অবস্থান নিলে তাদেরও জানাজা পড়াও নাজায়েজ। তিনি অবিলম্বে মূর্তি অপসারণের দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় আন্দোলন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে সরকারের সামাল দেয়া কঠিন হবে। তিনি বলেণ, সরকার আমাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, বাধা দিয়ে, গ্রেফতার করে ঈমানী আন্দোলন দমানো যায় না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন