আশরাফ আলী সোহান: একুশের চেতনায় ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: অধ্যক্ষ মাও. ইউনুছ আহমাদ

সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

একুশের চেতনায় ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: অধ্যক্ষ মাও. ইউনুছ আহমাদ

আইএবি নিউজ: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, মাতৃভাষা বাংলা আল্লাহর দেয়া দান। কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও নিজ-ভাষাভাষিদের কাছে যখন কোন নবী পাঠিয়েছেন তাঁকেও সে ভাষা দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কাজেই ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকেও মাতৃভাষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। যারা আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে ভিন্ন ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল ওরা জালিম।

তিনি বলেন, ভাষার জন্য শাহাদাতবরণকারী সালাম, জব্বার, বরকত, রফিকরা নিজ জীবন বিলিয়ে দিয়ে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কিন্তু আজ বাংলা ভাষার সর্বত্র প্রচলন হচ্ছে না। অন্তত বাংলাদেশে তো সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন করা প্রয়োজন ছিল।

অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেন, একুশের চেতনায় চলমান সঙ্কট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আমাদের দেশের শাসক শ্রেণীর দুর্বলতার কারণে ভিনদেশী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে দেশ। আমাদেরকে ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে জর্জরিত করেছে। নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চার পরিবর্তে ভিনদেশী সংস্কৃতির আমদানী করা হচ্ছে। গ্রীক দেবীর মূর্তিও মুসলমানের সংস্কৃতি নয়, এটা ভারতীয় সংস্কৃতি। মূর্তির সংস্কৃতি রুখে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের দলের মন্ত্রীরা মূর্তিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক মনে করে মূর্তি পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজেরাও ঈমানহারা হচ্ছে এবং দেশবাসীকেও ঈমানহারা বানাচ্ছে। নব্য নাস্তিক-মুরতাদ ও নবীর দুশমনসহ সকল ষড়যন্ত্রকারী শক্তিকে রুখে দিতে হবে। ভাষা আল্লাহরই দান। মুখের ভাষাকে যারা কেড়ে নিতে চেয়েছিল তারা আসলেই মানবতার শত্র“। এই মানবতার শত্র“দের যেভাবে বাংলার দামাল ছেলেরা পরাজিত করে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তেমনিভাবে মহানবীর দুশমন নব্য নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুরানা পল্টনস্থ অফিস মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা এবিএম জাকারিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ, মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম, নূরুজ্জামান সরকার, ছাত্রনেতা সাইফ মুহাম্মদ সালমান, শ্রমিকনেতা নকীব বিন হুসাইন প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, বাংলা ভাষার জন্য যারা মায়াকান্না করছে তারা এবং তাদের স্বজনরা বাংলার পরিবর্তে ভিনদেশী ভাষা চর্চা নিয়ে ব্যস্ত। দেশের উচ্চ আদালতেও ভিনদেশী ভাষায় রায় লেখা হয়। বড় দুটি দলের নামও বাংলা নয় বরং ভিনদেশী ভাষায়। যারা ভাষার জন্য আমাদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে তাদের দোসর এবং বর্তমান তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ভাষা ও স্বকীয়তা ও ঐহিত্য হারিয়ে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ভাষা আন্দোলন শিক্ষা দেয় সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করার। বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে সেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো যারা জীবন দিয়েছে তাদের পরিবারকে যথাযথ মর্যাদা দেয়া হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ভাষা শহীদদের মুসলিম রীতি-নীতি বাদ দিয়ে ভিনদেশী সংস্কৃতির মাধ্যমে স্মরণ করে তাদের আত্মাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।

আলোচনা শেষে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন