আইএবি নিউজ: আমাদের দেশের শাসক শ্রেণীর দূর্বলতার কারণে ভিনদেশী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে জর্জরিত আমাদের দেশ। তিনি বলেন, নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চার পরিবর্তে ভিনদেশী সংস্কৃতির আমদানী করা হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলা আল্লাহর দেয়া দান। ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকেও মাতৃভাষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু সালাম, জব্বার, বরকত, রফিকরা নিজ জীবন বিলিয়ে দিয়ে বাংলাভাষা রক্ষা করেছেন। তারপরও আজ বাংলা ভাষার সর্বত্র প্রচলন হচ্ছে না। অন্তত বাংলাদেশে তো সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন করা প্রয়োজন ছিল।
আজ মঙ্গলবার বিকালে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। পুরানা পল্টনস্থ অফিস মিলনায়তনে সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ছাত্রনেতা জিএম রুহুল আমীন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল এ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান শেখ, আলহাজ্ব মনির হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) এইচ এম খান, শহিদুল ইসলাম কবির, নুরুজ্জামান সরকার, আব্দুর রব পাটোয়ারি প্রমুখ।
অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমদ বলেন, গ্রীক দেবীর মূর্তিও মুসলমানের সংস্কৃতি নয়, এটা ভারতীয় সংস্কৃতি। মূর্তির সংস্কৃতি রুখে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, সরকারের দলের মন্ত্রীরা মূর্তিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক মনে করে মূর্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজেরাও ঈমানহারা হচ্ছে এবং দেশবাসীকেও ঈমানহারা বানাচ্ছে। অবিলম্বে মূর্তির সংস্কৃতি থেকে সরকারকে বের হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় মুর্তি পক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকার টিকে থাকতে পারবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, ভাষার জন্য জীবনদানকারীরা সকলেই মুসলমান। মুসলমানদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য ইসলামী রীতিনীতি অনুযায়ী দোয়া-দরুদ করতে হবে। বর্তমানে যেভাবে ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করা হচ্ছে এতে তাদের আত্মা শান্তি পাবে না বরং কষ্ট পাবে। শান্তির জন্য সূরা ফাতিহা, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি করতে হবে।
অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, বাংলা ভাষার জন্য যারা মায়াকান্না করছে তারা এবং তাদের স্বজনরা বাংলার পরিবর্তে ভিনদেশী ভাষা চর্চা নিয়ে ব্যস্ত। দেশের উচ্চ আদালতেও ভিনদেশী ভাষায় রায় লেখা হয়। ভাষা আন্দোলন না হলে স্বাধিকার আন্দোলন হতো না এবং দেশও স্বাধীন হতো না। তিনি বলেন, ইসলামকে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বলে গাল দেয় তারা কখনো মুক্তিযোদ্ধা নয়, প্রকৃত মুত্তিযোদ্ধারা আল্লাহর নাম নিয়েই যুদ্ধ করতেন।
সভাপতির বক্তব্যে বীল মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ইসলামকে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত আখ্যা দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার শ্লোগান দেয়, তারা জ্ঞানপাপি। স্বাধীনতাযুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ভাষা আন্দোলন শিক্ষা দেয় সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করার। বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে সেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো যারা জীবন দিয়েছে তাদের পরিবারকে যথাযথ মর্যাদা দেয়া হয়নি। ভাষা শহীদদের মুসলিম রীতি-নীতি বাদ দিয়ে ভিনদেশী সংস্কৃতির মাধ্যমে স্মরণ করে তাদের আত্মাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। আলোচনা শেষে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন মহাসচিব।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
-
আইএবি নিউজ: অদ্য ২৯ জানুয়ারি'১৭ মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় চন্দনা চৌরাস্তা সংলগ্ন ময়মনসিংহ রোডে টেকনগপাড়াস্থিত সৈকত কনভেনশন হলে ইসলামী আন্দ...
-
Ashraf Ali Sohan - Musical artist, Writer, Web Developer, and young Entrepreneur from Bangladesh Ashraf Ali Sohan Is a Bangladeshi Islamic s...
-
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন (১৯৯১-২০১৬) প্রতিষ্ঠাতা ইসলামী আন্দোলন এর সফল রূপকার, ইসলামের মুক্তিদাতা চরিত্রকে জনমানসে প্রত...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন